আজ মনটা বেশ বিষণ্ণতায় ভরে আছে । কেমন জানি বুকের ভেতরটা কিছের কষ্টে গুমরে গুমরে কাদছে । মাথায় কিছু কাজ করে না সারাক্ষণ ফেলে আসা দিনগুলো মনে পড়ে ।
মাথায় এলোমেলো চিন্তাগুলো ঘুরপাক খেতে থাকে আর টিক টিক করে এক একটি সেকেন্ডে সময় চলে যায় । রাত প্রায় দশটা বাজে আজ সব ভুলে একটু ঘুমাবো বলে মোবাইল সাইলেন্ট করে নিলাম । কিছুটেই ঘুম আসছে না দেখে তোসকের নিচে রাখা ঘুমের টেবলেটের পাতা থেকেই দুটো খেয়ে নিলাম । এর কিছুক্ষণ পর আমি হারিয়ে গেলাম ঘুমের দেশে ।
দরজায় ঢুম ঢুমম আওয়াজে সকালে ঘুম ভেঙে গেল । সকাল তো নয় যেন দুপুর ছুঁই ছুঁই ॥ আমি উঠে কিছুটা ফ্রেশ হয়ে নিলাম । এরপর মোবাইলের স্ক্রিন অন করার সাথে সাথেই দেখি রবিনের শ খানের মিস্ড কল ।
আমি অভিমানে কল ব্যাক করলাম না । এরপর মন ভারী করে ইন্টারনেটের পাতায় চোখ বুলাতে থাকি আর নোট করে রাখি আমার জীবনের ঘটে যাওয়া সব স্মৃতি গুলো । এমন সময় আবারও রবিনের ফোন ।
অবশেষে ফোন রিসিভ করেই নীরবে কান পেতে রইলাম ।
ও আমার বেদনা হয়তো অনুধাবন করতে পারলো তাই ও নিজের কথাগুলো সব বলতে লাগলো ------
আকাশ, আমি জানি তুমি আমার উপর রাগ করেছো । আর এটাও জানো আমি তোমাকে আমার কথাগুলো বলার জন্য কতবার ফোন করেছি । কিন্তু আকাশ আমরা কি বা করতে পারি? আমাদের দেশে আমাদের একসাথে বসবাস করার স্বীকৃতি দেওয়া হয় না আর তার উপরে পরিবারের চাপ । হ্যাঁ অবশেষে আমি নিজের কাছে হেরে পরিবারের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য হয়েছি । জানো আকাশ এই মুহূর্তে তোমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার মত মুখ আমার নেই । কিন্তু তারপরও বাস্তবতা মেনে নিতে হয় ॥ হ্যাঁ আজ আমার বিয়ে, কিন্তু বিয়ে হলেও কি হবে আমার ভালোবাসা সব সময়ই তোমার কাছেই থাকবে । আকাশ তুমি এখনি আমার বাড়িতে আছ । মনে রেখো আজকে যদি তুমি আমার বিয়েতে না আস তাহলে সন্ধ্যায় আমার বরযাত্রা হবে না হবে লাশের কপিনের যাত্রা ।
এরপর ও একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে আর আমি আসছি বলেই ফোন কেটে দিলাম ।
--- আমি রবিনের পছন্দে কিনে দেওয়া পোশাক গুলো পরে ওদের বাড়িতে চলে গেলাম । বিয়ে বলে কথা, বাড়িতে লোকের সমারোহে গমগম করছে ॥ আমি সিঁড়ি বেয়ে উপড়ে উঠি আর নিজেকে সাধ্যমত নিয়ন্ত্রণে রেখে রবিনের সাথে দেখা করি ।
মনটা বেদনায় হু হু করলেও তা চাপা রেখে মুখে হাসি রাখার চেষ্টা করলাম । কিন্তু তারপরও বেদনার ছাপটা লুকোতে পারলাম না । আমি রবিনের বন্ধুদের সাথে গল্প করতে লাগলাম । দেখতে দেখতে সময় গড়িয়ে বর যাত্রার সময় চলে এল । আমি রবিনের রুমে ঢুকে শেষ বারের মত আলিঙ্গন করে একটা দীর্ঘ কিস করলাম এরপর ছলছল নয়নে এক সময় যেই বুকে মাথা রেখে জীবনের ঠিকানা খুজতাম সেই লোমশ বুকটি শেরওয়ানি পাঞ্জাবীতে ঢেকে দিলাম । এভাবেই ওকে বরের বেশে নিজ হাতে সাজিয়ে দিলাম ।
বর যাত্রার জন্য কিছু মানুষ বাদে সবাই তৈরি হয়ে আছে । আমি আমার প্রাণের প্রিয় ভালোবাসার মানুষটিকে হাজারো ফুলে সাজানো গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে রাস্তার পাশে দাড়ালাম । ও আমাকে ওর পাশের শিটে বসার জন্য অনুরোধ করল । আমি পরের গাড়িতে আসবো বলেই দাড়িয়ে রইলাম । এরপর গাড়ির যাত্রা শুরু হলো আর দেখতে দেখতে সন্ধ্যার মৃদু আলোয় গাড়িগুলো অদৃশ্য হয়ে গেল । আমি এক বুক বিষাদে বাড়ি ফিরে এলাম । এরপর আমি আমার মোবাইল ফরম্যাট করে দিলাম এবং ওর দেয়া উপহার গুলো আর ওর সব স্মৃতি নষ্ট করে দিলাম । এরপর কি হয়েছে আমার জানা রইল না । পরদিন আমি নিজেকে আবিষ্কার করলাম হাসপাতালের বেডে ।
আমি হাসপাতাল থেকে রিলিজ হওয়ার পর আমার পরিচিত বন্ধু সাহায্য পাড়ি জমালাম অন্য শহরে । আর ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করলাম জীবনের সব অতীত .......।
সমকামি প্রেমের আরও গল্প পড়তে ভিজিট করুন http://wearenotyboy.blogspot.com এ আর সাইটের অফিসিয়াল পেইজ www.fb.com/gaysexbd তে লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন ।